সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার জন্য যিনি আমাদেরকে সাহম আলহিন্দ মিডিয়ার পক্ষ থেকে জামাআতুল মুজাহিদীনের সম্মানিত আমীর শাইখ সালাহুদ্দীন হাফিজাহুল্লাহ সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য উপস্থিত করেছেন এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি, আলহামদুলিল্লাহ সলাত সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ () এর প্রতি

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, শাইখ আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি যে আপনি কষ্ট করে আমাদেরকে সময় দিচ্ছেন

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফিওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ জাযাকাল্লাহু খাইরান, আপনি আমার পর্যন্ত কষ্ট করে এসেছেন এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া, আলহামদুলিল্লাহ্

সাহম আলহিন্দঃ শাইখ! জামাআতুল মুজাহিদীন প্রতিষ্ঠা এবং ঐতিহাসিক পটভূমি সম্পর্কে আমাদের অবহিত করুন

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি) : আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু আলা রসূলিল্লাহ, আম্মাবাদ। ভারত উপমহাদেশ যখন ব্রিটিশ শাসকদের দখলে ছিল, তখন এই উপমহাদেশের প্রকৃত মুসলিমগণ ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেওয়া কুফরি শাসন মেনে নিতে পারেননি। ফলে ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশদের ৎখাতের জন্য এই উপমহাদেশে মুসলিমদের দ্বারা একটি জামাআহ তৈরি হয় যার নামজামাআতে মুজাহিদীন এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) এবং তার সুযোগ্য সেনাপতি ছিলেন শাহ ইসমাঈল শহীদ (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁদের নেতৃত্বে এই ভূখন্ডের কিছু অংশে ইসলামি হুকুমাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল

কিন্তু ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে বালাকোটের যুদ্ধে নেতৃস্থানীয় মুজাহিদীন সহ আরো অনেক মুজাহিদ শহীদ হবার পর ইসলামী শাসনের পতন ঘটে এবং মুসলিমরা নানা ভাবে দূর্বল হতে থাকে। ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেওয়া কুফরি আইনে এবং নানা জুলুম অন্যায়ের স্বীকার হয়ে মুজাহিদগণ জেল, ফাঁসী দীপান্তর ইত্যাদি পরীক্ষার সম্মুখীন হতে থাকে। এক পর্যায়েজামাআতে মুজাহিদীন” –এর কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ অনেক রক্তপিচ্ছিল অঞ্চলের নামধারী মুসলিম এবং অমুসলিম নেতারা দীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মুজাহিদরা যে ত্যাগের কোরবানি করেছিলেন তা পুঁজি করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে কাফিরদের তৈরি করা গণ আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশদের অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করে। দুঃখের বিষয় ব্রিটিশরা এই ভূমি ছেড়ে চলে যায় বটে, কিন্তু তাদের রীতি নীতি, বিচার ব্যবস্থা সমস্ত কিছু রেখে যায়। 

এমতাবস্থায় ভারত উপমহাদেশের পশ্চিম অঞ্চলের পাকিস্তান, আফগানিস্তানে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা এবং কাফিরদের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য মুজাহিদীনরা জেগে ওঠে কিন্তু উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চল তথা বাংলাদেশে সহীহ আক্বীদা মানহাযের ভিত্তিতে কোন ক্বিতালি তানজীম প্রতিষ্ঠিত ছিল না। যারা কিনা কালিমা পড়া মুসলিম নামধারী ত্বাগুত শাসকদের ৎখাত করে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করবে। ঠিক সেই মুহুর্তে বাংলাদেশের ভূমিতেতানজীম আলকাইদাতুল জিহাদ” –এর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সহীহ আক্বীদাহমানহাযের ভিত্তিতে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শাইখ আব্দুর রহমান ইবন আব্দুল্লাহ ইবন ফজল (রাহিমাহুল্লাহ) এর নেতৃত্বে একটি জিহাদী তানজীম প্রতিষ্ঠিত হয়। যে তানজীমের সুযোগ্য সেনাপতি ছিলেন শাইখ নাসরুল্লাহ (রাহিমাহুল্লাহ) যার নামকরণ করা হয় পূর্বের ব্রিটিশ ৎখাতের যে জিহাদী তানজীম ছিল তার নামানুসারেজামাআতুল মুজাহিদীন

সাহম আলহিন্দঃ জামাআতুল মুজাহিদীন আকিদামানহাজ কর্ম নীতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি) : আমরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামআতের আকিদা আনুসারি মুসলিম দীন কায়েম এর ক্ষেত্রে আমরা কিতাল এর আকিদা পোষণ করি পবিত্র কুরআনসুন্নাহই আমাদের মানহাজ আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হলঃ আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দেয়া পদ্ধতি কিতাল তথা সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে শিরক কে ৎখাত করে তাওহিদ তথা আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করে জান্নাত প্রাপ্তি কুরআনে বর্ণিত দীন কায়েম এর পদ্ধতিকে আমরা কর্ম নীতি হিসাবে গ্রহণ করেছি। আমরা তিন দফা কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছি.

) দাওয়াত তথা উদ্বুদ্ধকরণ। বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ

হে নবী আপনি মুমিনদেরকে ক্বিতালের জন্য উদ্বুদ্ধকরুন।” ( সূরা আনফাল৬৫)

) প্রশিক্ষণ। বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ وَمِنْ رِبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآَخَرِينَ مِنْ دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ

আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজেদের শক্তি সামর্থে্যর মধ্য থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যা দ্বারা আল্লাহর শত্রুদের এবং তোমাদের শত্রুদের ভীতসন্ত্রস্ত করবে, আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদেরকে যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন।” (সূরা আনফাল৬০)

) কিতাল তথা সশস্ত্র যুদ্ধ। বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ فَإِنِ انْتَهَوْا فَإِنَّ اللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ

আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন।” (সূরা আনফাল: ৩৯)

আমাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে আইম্মাতু কুফর (কুফফারদের শক্তির কেন্দ্র) –

যাদের মাথা ভেঙ্গে দিলে অন্য অংশ এমনিতেই ভেঙ্গে পড়বে

আমরা ক্বিতালি কাজগুলো মাসালিহ (উপকার) এবং মাফাসিহ (ক্ষতি) এর

মধ্যে ভারসাম্য রেখে সম্পাদন করা জরুরি মনে করি।

যে মুজাহিদীনগণ দীন প্রতিষ্ঠার কাজ করছেন

সেটা পৃথিবীর যে কোন প্রান্তেই হোক তারা আমাদের থেকে আমরা তাদের থেকে

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “এক মুমিন অপর মুমিনের জন্য দেয়ালের মত যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তি যোগায়” (মুত্তাফাকুন আলাইহি) অন্য এক হাদীসে এসেছেমুমিনরা পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়াঅনুগ্রহ মায়ামমতায় একটি দেহের ন্যায় যার এক অঙ্গ ব্যাথা পেলে অন্যান্য অঙ্গও তা অনুভব করে” (মুত্তাফাকুন আলাইহি)

আমাদের ক্বিতালি টার্গেট এমন হওয়া দরকার যা সামগ্রিক ভাবে বিশ্ব মুসলিমের জন্যে আগামীর খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। যা লক্ষ্যভেদী, কার্যকর সুদৃঢ় ফল বয়ে আনে এমন টার্গেটকে প্রধান্য দিয়ে কর্মসূচী হাতে নেয়াই আমাদের ক্বিতালি কর্ম পরিকল্পনা

সাহম আলহিন্দঃ বরকতময় জিহাদ গজওয়াতুল হিন্দ আপনাদের পরিকল্পনা কি? বা ভারতীয় উপমহাদেশ আপনারা কোন ভাবে কাজ করতে চাচ্ছেন ?

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): দেখুন! দীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিক হচ্ছে দাওয়াহ এবং সামরিক। দুটি বিষয়ে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। দাওয়াহ হল প্রকাশ্য একটি বিষয় যা সকল এর মাঝে এমন ভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে করে উম্মাহ মধ্যে ত্বগুত গোষ্ঠীরা কোণঠাসা হয়ে একঘরে হয়ে যায় যেন তারাই সমাজ থেকে বিচ্যুত, বিচ্ছিন্নতাবাদী

আর সামরিক বিষয়টি হল গোপন একটি ব্যাপার যা এই ফোরামে আলোচনা করার সুযোগ নেই। তবে হ্যাঁ, আপনাকে এতটুকু বলতে পারি বরকতময় জিহাদ গজওয়াতুল হিন্দে আমরা আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চে বুলন্দ করার জন্য তিন দফা কর্মসূচী নিয়ে একযোগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি

জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে কোন ভূখণ্ডের সীমানা বর্ধিতকরণ বা কোন ত্বগুতী গোয়েন্দা সংস্থার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নামে যে জিহাদ! এসব থেকে আমরা আমাদেরকে মুক্ত ঘোষণা করছি

আমরা সুন্নাহ মোতাবেক আমাদের সামরিক অভিযান পরিচালনা করব ইনশাআল্লাহ। পৃথিবীর মাঝে জিহাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ যেভাবে ছড়িয়ে পড়ে আজকে মুজাহিদীনদের একাধিক ভূমি বা ফিল্ড তৈরি হয়েছে সেই আদলে পরিবেশ তৈরির জন্য আমরা হিন্দেও কাজ করতে চাই যেমনভাবে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্থান, ইয়েমেন, উত্তর আফ্রিকার দেশসমূহে মুজাহিদগণ হিজরতের মাধ্যমে সেই ভূখন্ডগুলোতে জিহাদরত আছেন। ঠিক তেমনি হিন্দুস্থানেও যেন হিজরতের স্থান বরকতময় জিহাদের কেন্দ্র হতে পারে এবং আগামী খিলাফাহ প্রতিষ্ঠায় হিন্দুস্থানের অধিবাসী হিসাবে আমরা ব্যাপক অংশীদার হতে পারি এই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি মহান আল্লাহই আমাদের তাওফিক দাতা

সাহম আলহিন্দঃ গ্লোবাল জিহাদে অংশ গ্রহণ সম্পর্কে জামাআতুল মুজাহিদীন কর্মনীতি কি?

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): গ্লোবাল জিহাদে অংশ গ্রহনের বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। কেননা উম্মাহকে ইতিমধ্যে বিভক্ত করার জন্য খিলাফার নামে স্টেট ঘোষণা করে জিহাদের কৌশলকে ঝুঁকিপূর্ণ দুর্বল করে ফেলা হয়েছে। তাই আমরা সহীহ আকীদা মানহাজের ভিত্তিতে কোন কাজটি আগে করা প্রয়োজন তাঁর ভিত্তিতে আমাদের কর্ম নীতি প্রণয়ন করেছি আর সেটা হল উম্মাহকে বিভক্ত করা নয় বরং উম্মাহকে একতাবদ্ধ রেখে কিতালে অংশ গ্রহণ করা ব্যাপারে আমরা শাইখ আব্দুল কাদীর বিন আব্দুল আজীজ (হাফিঃ) লিখিতআলউমদাতু ফি দাদিল উদ্দাতি লিল জিহাদি ফি সাবিলিল্লাহবইয়েরআলরাদ্দু আলা শুবহাতিম মুতাআল্লিক্বাতিম বিল ইমারাহঅধ্যায়ের অনুসরণ করে থাকি। যেখানে একই ভূখন্ডে একাধিক ইসলামী দলের ক্ষেত্রে করণীয় হুকুমের আলোচনা এসেছে

সাহম আলহিন্দঃ সম্প্রতি কিছু জিহাদি ব্লগ ফোরামে আলোচিত হয়েছে যে, জামাআতুল মুজাহিদীন একটি আঞ্চলিক সংগঠন, বিচ্ছিন্নভাবে তারা কাজ করছে। এজন্য তাদের কাজে তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না ব্যাপারে কিছু বলবেন কি?

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): প্রথমে বলতে চাই, আমরা উম্মাহ থেকে বিচ্ছিন্ন নই বা উম্মাহ আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। আমাদের কাজগুলো যেন উম্মাহর ইমারতের এক একটি ইট হিসেবে কাজ করে সেই রকম পরিকল্পনা সাধ্যমতো পূর্বেও ছিল এবং এখনো আছে ইনশাআল্লাহ। তবে হ্যাঁ আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন প্রথমত আমাদের টার্গেট ছিল বাংলাদেশকে নিয়ে যার জন্য জামাআহ নাম ছিল খেয়াল করবেন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ সংক্ষেপে জেএমবি কিন্তু আমরা এই দীর্ঘ পথচলা পাড়ি দিয়ে এখন আর আঞ্চলিক কোন তানজীম সীমাবদ্ধ নই আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে আমাদের শাখা স্থাপন করেছি

যেমনজামাআতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া সংক্ষেপে জেএমআই। এছাড়া আরো কিছু ভূখন্ডে কাজ চলছে আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে আমাদের মূল জামাআহকেজামাআতুল মুজাহিদীনহিসেবে প্রকাশ করছি অগ্রগতি হচ্ছে কিনা এটার মূল্যায়ন আস্কারি উলামাগণ করে থাকেন ব্লগ বা ফোরামের ভাইগণদের নিকট আমাদের সার্বিক তথ্য না থাকার কারণে এমনটি হতে পারে তাছাড়া আমাদের কার্যক্রমকে আমরা শুরু থেকেই মিডিয়ার সামনে নিয়ে আসিনি এটা আমাদের একটি কৌশল ছিল দীর্ঘ পথ চলার পর বাস্তবতার আলোকেই আমরা মিডিয়া মুখী হয়েছি

প্রকৃত পক্ষে আমরা যখন কাজ শুরু করি, তখন সহীহ আকীদাহ মানহাজ ভিত্তিক দ্বিতীয় কোন তানজীম ছিল না যারা এই বাংলাদেশকে টার্গেট করে দীন কায়েমের কাজ করবে ২০০১ সালে আমরা যখন প্রথম প্রকাশ্য দাওয়াহ দিয়েছিলাম তখন আফগানিস্তানে আমেরিকানদের দ্বারা হামলা হয়েছিল। আমরা একটি লিফলেট প্রকাশ্যে সব জায়গাতে প্রচার এবং প্রসারের ব্যবস্থা নিয়েছিলাম, সেই লিফলেটের শিরোনাম ছিলওসামা বিন লাদেনের জিহাদের ডাক আলহামদুলিল্লাহ তখন এই দাওয়াহ অত্যন্ত ফলপ্রসূ অবস্থায় পৌঁছেছিল সেই সময় আমাদের এই লিফলেটের মধ্য দিয়ে আমরা অনেক মুজাহিদ সংগ্রহ করতে পেরেছিলাম, যারা কিনা বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করেছিলেন

আফগান জিহাদকে কেন্দ্র করে তখনকার সময় জিহাদের যে স্রোত এই বাংলাদেশের ভূমিতে তৈরি হয়েছিল সে সময় আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গাতে দাওয়াহর কাজকে ব্যাপক আকারে করার সামর্থ্য লাভ করেছিলাম

যার ফলশ্রুতিতে আমাদের অনেক মুজাহিদীন তৈরি হয়েছিলেন পরবর্তিতে ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলার পর আমরা আবারও একটি লিফলেট প্রচার করেছিলাম, একই সময়ে জুমুআর সলাতের পর সারা দেশের মসজিদগুলোতে প্রচার করা হয়েছিল আলহামদুলিল্লাহ তারও সুফল আমরা পেয়েছি। সেটাও ছিল প্রকাশ্য একটি দাওয়াহ ২০০৪ সালে রাজশাহীর বাঘমারা, নওগাঁর আত্রাইরানীনগর অঞ্চলে নাস্তিক সর্বহারা কর্তৃক মুসলিম সহ সাধারণ জনগণের উপর চাঁদাবাজি, হত্যা, ধর্ষণ সহ নানা নির্যাতনের কারণে মাজলুমদের উদ্ধার কল্পে আমরা সেখানে নাস্তিক মুরতাদদের ৎখাতের সিদ্ধান্ত নেই। যার ফলে, নাস্তিকদের ৎখাত পরবর্তি সময়ে মুসলিম সহ সাধারণ জনগণ আমাদেরকে পুর্ন সমর্থন করে

প্রথম দিকে যদিও এদেশের ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়াগুলো আমাদের অর্জনের পক্ষে ফলাও করে প্রচার করেছিল কিন্তু আন্তর্জাতিক ত্বগুতদের চাপের ফলে তাদের আজ্ঞাবহ মিডিয়াগুলো আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় ওই সময় আমরা কিতালের মাধ্যমে যে দাওয়াহ কাজ করেছিলাম অর্থা সর্বহারাদের ৎখাতের মাধ্যমে যে ম্যাসেজ সারা বিশ্বের মুসলিমদের নিকট পৌছাতে সক্ষম হয়েছিলাম তখন কিন্তু আমাদের এই দাওয়াহ একটি ফলপ্রসূ অবস্থায় পৌঁছেছিল

আমাদের এদেশের কওমী মাদ্রাসার উলামা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল। আমি নিজে এদেশের বড় বড় মাদ্রাসাগুলোতে সফর করেছিলাম। হাঠহাজারী, পটিয়া, নানুপুর সহ দেশের অন্যান্য কওমী মাদ্রাসা এবং বায়তুল মুকাররমের যিনি ৎকালীন খতিব মাওলানা ওবায়দুল হক্ব, তিনি সহ ওই সময়ের চরমোনাই পীর, মাসিক আল মদিনার সম্পাদক মাওলানা মহিউদ্দিন খান এবং এদেশের গ্রহণযোগ্য যারা উলামায়ে দীন আছেন প্রায় সকলের কাছেই এই দাওয়াহকে পৌঁছে দেয়ার লক্ষে আমাদের প্রতিনিধি দল গিয়েছিলেন

আলহামদুলিল্লাহ সকলেই রাজশাহীর সর্বহারাদের বিরুদ্ধে অভিযানকে সমর্থ করেছিলেন এবং এক পর্যায়ে সমর্থনের জোয়ার এতই বেশি হয়েছিল যে, কওমী উলামাদের মধ্যে এমন ভাবনা তৈরি হয়েছিল ইনশাআল্লাহ জিহাদের আরও একটি নতুন প্লাটফর্ম তৈরি হবে এদেশে দীন কায়েমের জন্য। কিন্তু ২০০৫ সালে ২৪ শে ফেব্রুয়ারী যখন বাংলাদেশের ত্বগুত সরকার আমাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তখন আমরা এই দাওয়াহকে আরও বেশি প্রচার এবং প্রসারের জন্য একটি ব্যতিক্রমী পদ্ধতিসাউন্ড ব্লাস্টএর মাধ্যমে লিফলেট ছড়িয়ে দাওয়াহ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে প্রায় ৫৫০ টি স্পটে আমাদের এই সাউন্ড ব্লাস্ট পদ্ধতির মাধ্যমে দাওয়াহ দেই

ইসলামী আইন বাস্তবায়নের আহ্বানশিরোনামে লিফলেট প্রচার করা হয় সেখানে

লিফলেটগুলো এমন ভাবে প্রচার হয়েছিল যে জাস্ট একটা সাউন্ড হলে, সাউন্ডের

মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষিত হবে এবং এটা এত বেশি প্রভাব পরেছিল

বাংলাদেশের মিডিয়া তো বটেই সারা বিশ্বের মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করে ছিল

জামাআতুল মুজাহিদীন ইসলামি আইন চায়, তারা ব্রিটিশ আইনকে অস্বীকার করে

এত কিছুর পরও ত্বগুত সরকার তাদের আজ্ঞাবহ নামধারী উলামাদের মাধ্যমে এদেশের মুসলিমদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তারপরও প্রকৃত মুসলিমদের বিভ্রান্ত করতে তারা সক্ষম হয়নি। এবং দাওয়াহর অংশ হিসেবে এই লিফলেটের যৌক্তিকতা কী? কেন প্রচার করা হল? কী কারনে হল? এটা আমরা পরবর্তিতে ২০০৮ সালে একটি সিডি প্রচারের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলাম। আপনারা যদি মিডিয়ার দিকে চোখ রাখেন সেখানেও এর বিস্তারিত জবাব পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ্ এখানে আমি বিস্তারিত আলোচনায় যাচ্ছি না

বরং /১৭ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূমিতে জিহাদকে ওপেন করে দেয়া হয়েছিল। এবং ওপেন করে দেয়ার মাধ্যমেই আমরা আজকে বাংলাদেশে নতুন করে আরও জিহাদি দলসমূহের অস্তিত্ব দেখতে পাই এবং আলহামদুলিল্লাহ কাজের মাধ্যমে দাওয়াহকে এত বেশি প্রচার করা হয়েছিল অন্যান্য যারা গ্রুপ বা ছোট ছোট দল ছিল তারা কেউ কেউ তানজীমকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে আমাদের সাথে একতাবদ্ধ হয়েছিলেন, বাইয়াহ বদ্ধ হয়েছিলেন

যারা আজকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার মাধ্যমে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তাঁদের পূর্বের প্রায় সকল দায়িত্বশীলই আমাদের সাথে এক সময় ছিলেন সকলেই আমাদের কাছে বাইয়াহ বদ্ধ ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁদের পূর্বের দায়িত্বশীলগণ আমাদের থেকে বাইয়াহ ভঙ্গ করে আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন দলের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। যেটা উসূল অনুযায়ী শরীয়াহগত ভাবে যারা প্রথম কাজ শুরু করেছিলেন তাদের সাথে যেভাবে একতাবদ্ধ থেকে কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে নিজেদেরকে গ্লোবাল জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত করার যে উসূল সেটাকে অনেকটা লঙ্ঘন করে অনেকে অনেক জায়গায় চলে গিয়েছিলেন

তারা যাবার পর হয়তবা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। কিন্তু উসুল এটাই হওয়া উচি ছিল যারা পূর্ব থেকেই বাংলাদেশের ভুখন্ডে জিহাদের কাজ করছে তাদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে সকলকে একত্রে নিয়ে কেন্দ্রের সাথে মিলিত হওয়া। আল্লাহর ইচ্ছায় যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কেন্দ্রের সাথে মিলিত হয়ে গ্লোবাল জিহাদে শরিক হতে পারতাম তাহলে বর্তমানে ২০১৭ সালে একটি শক্তিশালী প্লাটফর্মে উপস্থিত হতে পারতাম আমাদের একতাবদ্ধতা আমাদের জামাআহ বদ্ধতা আরও বেশি শক্তিশালী হতে পারত। কুফফারদের মুকাবেলায় আমরা আরও বেশি কিতালি কর্মসুচী অব্যাহত রাখতে পারতাম

এখন বিভিন্ন ব্লগ ফোরামের উদ্ধৃতি দিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বা জানাচ্ছেন ব্যাপারে আমি আরও যে কথাটি বলতে চাই, সেটা হচ্ছে অগ্রগতি হচ্ছে কি হচ্ছে না এটা মেইনলি কাজের উপর নির্ভর করছে। ২০০৫ সালের পর থেকে যে চাপের সম্মুখীন হয়েছিলাম বোধকরি এদেশের ভূমিতে আর কোন তানজীম সে রকম চাপ ত্বগুত দ্বারা নির্যাতন নিষ্পেষণের পরিবেশের স্বীকার হয়নি। যদিও ওই সময় থেকে হারকাতুল জিহাদ আল ইসলামী ভাইগণ জেলজুলুম, ফাঁসি, নির্যাতননিষ্পেষণের স্বীকার হয়ে আসছেন

পরবর্তিতে আরও সংগঠন তৈরি হয়েছে, তাদের উপরও এখন চাপ যাচ্ছে, বিগত / বছরে আমরা বিভিন্ন দলের অস্তিত্ব দেখতে পাই তাদের মাঝেও অনেক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের উপর এত চাপ তৈরি হয়েছিল যা আমাদের কায়েদুল মুজাহিদীনের সমস্ত বেস প্রায় / জন ছাড়া সবাইকে ফাঁসির মাধ্যমে শহীদ করে দেয়া হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ক্রস ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা যজ্ঞ চালানো হচ্ছে এভাবে এত কিছু হবার পরও, আমাদের শতশত ভাইবোন বন্দি আছেন, তারা বন্দি থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন, সেখানে অনেকের ফাঁসির রায় হয়ে আছে

এত কিছুর পরও আলহামদুলিল্লাহ আমরা যে টিকে আছি, আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ, এখনও টিকে আছি এবং টিকে থাকার মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালে আমাদের কায়েদুল মুজাহিদীনের কিছু ভাইকে বীর মুজাহিদীন ভাইয়েরা একটি বরকতময় অ্যাটাকের মাধ্যমে কুফফারদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন এটা বাংলাদেশের ভূমিতে একটি বিরল ঘটনাযেটা ব্রিটিশের শাসনের পর এধরণের ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই

আলহামদুলিল্লাহ জামাআতুল মুজাহিদীন কাজটি করতে সক্ষম হয়েছে আল্লাহর ইচ্ছায়। এখন এই আমি ব্যক্তিগত ভাবে আপনাদের কাছে যে সাক্ষাৎকার দিচ্ছি, আমি কোথায় ছিলাম? আল্লাহ আজকে আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে সব কিছুই পারেন সেটা তিঁনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। আমার এই উপস্থিতিই প্রমাণ করে আপনাদের সামনে জামাআতুল মুজাহিদীন কার্যক্রম কি পিছিয়ে যাচ্ছে না অগ্রগতি হচ্ছে সেই প্রশ্ন আমি আপনাদের সামনেই রাখলাম

সাহম আলহিন্দঃ জামাআতুল মুজাহিদীন কট্টরপন্থী তাকফিরি আকিদায় আক্রান্ত এরকম কিছু অভিযোগ শোনা যায় ব্যপারটি পরিষ্কার করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): প্রথমে বলতে চাই কুরআন মাজীদের সুরা আল বাক্বারাহ আল্লাহ বলেন,

قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ صَادِقِينَ

বলুন যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক তাহলে তোমাদের দলিলপ্রমান উপস্থাপন কর” (সূরা আল বাক্বারাহ: ১১১)

যে বা যারাই আমাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা তোহমত দিচ্ছেন তাদেরকে নসীহাহ দিচ্ছি যে, নিজেদের সত্যবাদিতায় ঠিক থাকুন নিছক ধারণার বশবর্তী হয়ে কোন মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিবেন না আমরা আপনার মাধ্যমে সকলকে পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই তাকফিরের ব্যাপারে আমরা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদাহ অনুসরণ করে থাকি বর্তমানে এই ফিতনা মোকাবেলায় শাইখ আবু হামজাহ আল মিশরি লিখিততাকফিরের ব্যপারে সতর্ক হোনএই কিতাবটির আমল করে থাকি

সাহম আলহিন্দঃ বর্তমানে ত্বগুতের আজ্ঞাবহ মিডিয়াগুলো প্রচার করছে যে, আদর্শিক মতাদন্দ্বে জামাআতুল মুজাহিদীন বিভক্ত হয়ে পড়েছে নব্য জেএমবি এবং পুরাতন জেএমবি উদ্ভব হয়েছে এটা কতটুকু সত্য

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি) : এটা পুরোটাই মিথ্যা, ত্বগুত কর্তৃক তৈরি কাল্পনিক নব্য পুরাতন শব্দ আমদানি করে মিথ্যাবাদী মিডিয়া প্রচার দিয়ে যাচ্ছে সকলের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই জামাআতুল মুজাহিদীন কোন বিভক্ত দল নয় আমরা এক জামাআহ ছিলাম, আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ। তবে এটা সত্য যে, আমাদের ভেতরকার কিছু আনুগত্যহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী দুষ্ট প্রকৃতির লোকেরা বাইয়াহ ভঙ্গ করে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার দাবীদারআইএসকে বাইয়াহ দেয় এবং চলে যায়

যাদের সাথে আমাদের দূরবর্তী কোন সম্পর্ক নেই ত্বগুত বাহিনী ধোঁকা দেয়ার জন্য এবং আন্তর্জাতিক ফেরাউনদের গোলামি ঠিক রাখার জন্য বাংলাদেশেআইএসএর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে আসছে এবংআইএসকে আমাদের সাথে জুড়ে দিয়ে তাদের নব্য জেএমবি বলে প্রচার দিচ্ছে এটা স্পস্ট যে, স্থানীয় ত্বগুতরা নব্য জেএমবি বললেও তাদের প্রভূ ত্বগুতি আন্তর্জাতিক মিডিয়া তাদেরআইএসবলেই প্রচার দিচ্ছে তাই বলতে চাই নব্য জেএমবি বলে কোন দল নেই এই নামে যত হামলা করা হয়েছে মর্মে মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে এর সাথে জামাআতুল মুজাহিদীন কোন সম্পর্ক নেই আমরা নিজেদেরকে এর দায় থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি

সাহম আলহিন্দঃ অনেক জায়গায় মুজাহিদীনদের মধ্যে আকীদামানহাজ অথবা নেতৃত্বের ব্যপারে কিছু অন্তঃকলহ দেখা যাচ্ছে ব্যপারে জামাআতুল মুজাহিদীন কোন নীতি অনুসরণ করে আসছে?

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): জী হ্যাঁ এই ব্যপারটি আমাদেরকেও খুবই ব্যথিত করেছে যে, উম্মাহ এর কলিজা কে বিভক্ত করে দেয়া হয়েছে যার ফলে কুফফাররা লাভবান হয়ে আমাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে আমরা মুসলিম জামাআহকে ঐক্যবদ্ধ রাখার নীতি গ্রহণ করেছি এবং বাইয়াহ ভঙ্গ করে আনুগত্যহীন হয়ে ছাওয়াবের আশায় জিহাদের কাজ! থেকে নিজেদের মুক্ত ঘোষণা করছি। এবং যাবতীয় সীমালঙ্ঘন বাড়াবাড়ি সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই

সাহম আলহিন্দঃ কিছুদিন পরপরই ত্বগুতি মিডিয়া গুলো প্রচার করছে যে, জামাআতুল মুজাহিদীন ডাকাতি, ছিনতাই কাজে লিপ্ত রয়েছে এবং এটা অনেক সরলমনা মুসলিমকেও বিভ্রান্ত করছে ব্যপারে আপনার উত্তর জানতে চাই

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি) : আজকে আমাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগ ত্বগুতি মিডিয়াগুলো দিচ্ছে এটা নতুন কিছু নয়। ডাকাত, সন্ত্রাসী, বিশৃঙ্খলাকারী, বিচ্ছিন্নতাবাদী ইত্যাদি মিথ্যা অপবাদ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগ থেকেই কাফিররা মুসলিমমুজাহিদীনদের দিয়ে এসেছে। আবু বাশীর (রাঃ) হুদায়বিয়ার সন্ধির পর কুরাইশ বাণিজ্যিক কাফেলার উপর তাঁর দলবল নিয়ে যে বরকতময় আক্রমন চালিয়ে ছিলেন সেটাকে যদি ত্বগুতি মিডিয়া বা ত্বগুতের আজ্ঞাবহ নামধারী উলামারা ডাকাতি করা বা সন্ত্রাস সৃষ্টিকরা বলে আখ্যায়িত করে তাহলে এমন ডাকাত হতে আমাদের কোন আপত্তি নেই

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরে সাহাবা আজমাঈন (রাঃ) এর পর আজ পর্যন্ত মুজাহিদদেরকে কাফেরদের উপর হামলা করার জন্য এমন সব মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছিল এবং এখনো হচ্ছে। কুরআনসুন্নাহর দৃষ্টিতে কুফফারদের মধ্যে যাদের জান মাল হালাল শুধু তাদেরকেই টার্গেট করতে হবে এতে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি কাম্য নয় তাই আমাদের সরলমনা মুসলিম ভাইদের প্রতি আহবান এই যে, আপনারা সুরা হুজুরাতের ছয় নাম্বার আয়াতের আমল করবেন। যেখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ

হে মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত: তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।

আমাদের উচিত জিহাদক্বিতাল সম্পর্কে বেশী বেশী জ্ঞান অর্জন করা যখন বিষয়ে আমাদের মৌলিক জ্ঞান অর্জন হবে তখন ত্বগুতি মিডিয়া যাদের ডাকাত বলছে আপনি তাদেরকে দ্বীনের রক্ষাকারী সাব্যস্ত করবেন ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিরুদ্ধে কথিত ডাকাতি, ছিনতাই এর যে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে তা মিথ্যা এবং এর থেকে সাধারণ মুসলিমদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি

সাহম আল হিন্দঃ আলহামদুলিল্লাহ, আপনি আমাদেরকে দীর্ঘক্ষণ সময় দিয়ে আমাদের অনেক সংশয় নিরসন করেছেন এবং প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। জাযাকাল্লাহু খাইরান

শাইখ সালাহুদ্দীন (হাফি): আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন; বারাকাত দান করুন এবং মুসলিম উম্মাহকে হাক্ব পৌঁছে দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমাদের সকলকে হিদায়াতের উপর ইস্তেকামাত থাকার তাওফিক্ব দান করুন। আমীন!

سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ اَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ اَسْتَغْفِرُكَ وَاَتُوْبُ اِلَيْكَ


Interview of Jamaatul Mujahideen amir

مقابلة خاصة // للشيخ صلاح الدين حفظه الله